Pages

Tuesday, November 12, 2013

যে খাবারে মগজ খোলে

সত্যিই কি এমন কোনো খাবার আছে, যা মস্তিষ্কের জন্য ভালো? কীভাবে কাজ করে সেসব খাবার? এ ব্যাপারে গবেষণা হয়েছে অনেক। গবেষণা থেকে দেখা গেছে, আপনার শরীরকে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখার জন্য যেমন ভিটামিন ও মিনারেল প্রয়োজন, তেমনি মস্তিষ্ক ও স্নায়ুগুলোকেও সচল রাখার জন্য এসব খাবারের প্রয়োজন। গবেষকেরা তাই এসব খাবারের নাম দিয়েছেন ব্রেইন ফুড বা মস্তিষ্কের খাদ্য।
বেশির ভাগ বি-ভিটামিন এবং ফলিক অ্যাসিড গ্রহণের ফলে আপনার মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র বিশেষ লাভবান হয়।
ভিটামিন বি১ (থায়ামিন): সুস্থ মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষগুলোর জন্য এই ভিটামিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সম্পূর্ণ খাদ্যশস্য এবং খাদ্যশস্য থেকে তৈরি খাবার যেমন রুটি, ভাত ও পেস্তায় এই ভিটামিন থাকে।

ভিটামিন বি৫ (প্যানটোথেনিক অ্যাসিড): এটা কো-এনজাইম গঠন করে, যা স্নায়ুর উদ্দীপনা প্রেরণে সাহায্য করে। এই ভিটামিন আপনি পেতে পারেন মাংস, মাছ, সম্পূর্ণ খাদ্যশস্য, শিম বা মটরশুঁটি, দুধ, শাকসবজি ও ফল থেকে।
ভিটামিন বি৬ (পাইরিডক্সিন): এই ভিটামিন ট্রিপটোফ্যানকে সেরোটোনিনে রূপান্তর করে। সেরোটোনিন হলো মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদান। এই ভিটামিন বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে পাওয়া যায়। যেমন মুরগির মাংস, মাছ, লিভার ও কিডনি। সম্পূর্ণ খাদ্যশস্য, বাদাম ও শিম থেকেও আপনি এই ভিটামিন পেতে পারেন।
ভিটামিন বি১২ (সায়ানোকোবেলামিন): এটা রক্তের লোহিত কণিকার পরিপক্বতায় সাহায্য করে, প্রোটিন গঠনে সাহায্য করে এবং স্নায়ুকোষগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করে। ডিম, মাংস, মাছ, দুধ এবং দুধজাত খাবার থেকে আপনি এই ভিটামিন পেতে পারেন।
ফলিক অ্যাসিড: মস্তিষ্কের ফ্যাটি অ্যাসিডের বিপাকক্রিয়ায় এই ভিটামিন অপরিহার্য। ফলিক অ্যাসিড বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে পাওয়া যায় যেমন—কলা, কমলার রস, খাদ্যশস্য থেকে প্রস্তুতকৃত খাবার, লেবু, স্ট্রবেরি, ফুটি বা তরমুজ, শাকযুক্ত সবজি, শিম, মটরশুঁটি ইত্যাদি। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ফলিক অ্যাসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ফলিক অ্যাসিডের মাত্রা কম থাকলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
স্নায়ুকে ক্ষয় করবেন না: স্নায়ুগুলোর কাজ সঠিকভাবে পালন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কিছু মিনারেল বা খনিজ উপাদান। আপনার স্নায়ু যদি ক্ষয় হতে থাকে, তা হলে আপনার মস্তিষ্ক তথা সারা শরীর অকেজো হয়ে পড়বে। তাই স্নায়ুর ক্ষয় রোধ করতে এবং স্নায়ুগুলোকে উজ্জীবিত করতে আপনাকে নিচের মিনারেলগুলো গ্রহণ করতে হবে: ম্যাগনেশিয়াম: এটা পাওয়া যায় সম্পূর্ণ খাদ্যশস্য, শিম বা মটর-জাতীয় বীজ, বাদাম এবং সবুজ শাকসবজিতে।
পটাশিয়াম: এটা পাওয়া যায় খুবানি, আভোকাদো, কলা, খরমুজ, মোসম্বি লেবু, কমলা, শুকনো খেজুর বা আলুবোখারা, স্ট্রবেরি, আলু, মাংস, মাছ প্রভৃতি খাবারে।
ক্যালসিয়াম: এটা পাওয়া যায় দুধ ও দুধজাত খাদ্য যেমন পনির ও দই; শিম, ফুলকপি, বিট, ভক্ষণীয় কাঁটাযুক্ত মাছ ইত্যাদি খাবারে।
মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে খাবার খান: আপনার মস্তিষ্ক সচল রাখতে অবিরাম জ্বালানি প্রয়োজন। আর এ জন্য দিনে দুবার বা তিনবার বড় ধরনের খাবারের বদলে বারবার অল্প করে খাবার খাবেন। পানি পান করবেন প্রচুর পরিমাণে। আপনার মস্তিষ্কের কাজের জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। মানসিক চাপে আপনার মস্তিষ্ক পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই যখনই আপনি ক্লান্ত থাকবেন, দুশ্চিন্তায় থাকবেন কিংবা চাপের মধ্যে থাকবেন তখন অতিরিক্ত পানি পান করবেন। কফি এবং কোলা সীমিত পরিমাণ গ্রহণ করবেন। কারণ, এসব পানীয়তে ক্যাফিন থাকে, যা মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
মিজানুর রহমান
আবাসিক সার্জন, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো

0 comments:

Post a Comment

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks
 
^ Back to Top