skip to main |
skip to sidebar
বিখ্যাত মনীষীদের নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন>>>>>> আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল
আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল
(১৮৪৭-১৯২২)
এডিনবরায় আলেকজান্ডার গ্রাহামবল ১৮৪৭ সালে ৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতিতে স্কট ছিলেন। তাঁর বাবা মেলভিলেবেলও ছিলেন প্রতিভাবান মানুষ। মেলভিলে ফোনেটিক্স বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি এডিনবরা স্কুলে পড়াশুনা করেন ও পরে লন্ডনর ইউনির্ভারসিটি কলেজে যান। তিনি পরে তাঁর বাবার সঙ্গে কানাডায় যান, যেখানে তিনি মুক ও বধিরদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ করেন। পি, এইচ, ডি ডিগ্রি পান জার্মানির উর্জবাগ থেকে। টেলিফোনের আবিস্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহামবেলের নাম বিজ্ঞান জগতে এক উজ্জ্বল জোত্যি। টেলিফোনে.......... প্রথম ধ্বনি ও প্রথম কথা ছিল “Mr. Wagon, come here please. I want you.” এই কথা গুলো বলেছিলেন টেলিফোনের আবিস্কারক আলেকজান্ডার
গ্রাহামবেল। আজ তো সর্বত্র গ্রাহামবেল রয়েছে। পৃথিবীর সব যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছে এই গ্রাহামবেলই। টেিরফোনের মাধ্যমেই মানুষ এক দেশ থেকে আর এক দেশে কথা বলছে।ছোটবেলায় একটা গল্প তিনি সবাইকেই শোনাতেন। তিনি এডিনবরার এক কারখানায় তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে গিয়েছিলেন। ছেলেগুলোকে কিছু গমের দানা দিয়ে কারখানার অফিসার বললেন এগুলোর খোসা কালকে ছাড়িয়ে আনতে। বেল বাড়িতে এসে নখ পরিস্কার করার ব্রাশ দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি খোসা ছাড়িয়ে নিলেন। পরের দিন কারখানার মালিককে এই কথাটা বললেন।মালিক এই কথা শুনে ব্রাশের নীতি অনুসারে এক মেশিন বসালেন। দেখা গেল খুব সহজেই খোসা ছাড়ানো যায়।মুক ও বধিরদের শিক্ষা দেবার জন্য তিনি একটা বিশেষ ধরনের যন্ত্র তৈরি করেন। যে যন্ত্রটি একই কথা বার বার বলে যাবে, তিনি বধিরদের শিক্ষা দেবার জন্য একটা প্রতিষ্ঠানও স্থাপন করেছিলেন। বধিরদের শ্রবণশক্তি দান নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই তিনি টেলিফোন আবিস্কার করেন। তাছাড়া তিনি ম্যাবেল হাবার্ড নামে একটি বধির মেয়েকে বিয়ে করেন।১৮৭৫ সালের একটি ঘটনা যা গ্রাহামবেলকে সজাগ করে তোলে। টেলিগ্রাফে অনেকগুলো বার্তা পাঠানো নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এই কাজ করার সাথে বিদ্যুতের সাহায্যে শব্দ পাঠানো নিয়ে তিনি ভাবতে শুরু করেন, হঠাৎ তারের ভিতর দিয়ে এক স্প্রিংয়ের টংকার ধ্বনি তাকে বিচলিত করে তোলে। সেই তখন থিকেই তিনি এই কাজে মেতে উঠেন, বিজ্ঞানে এই বিষয় নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে কিন্তু গ্রাহামেবলই প্রথম টেলিফোনীয় সঠিক নীতি ধরতে পেরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন বায়ুর যেমন ঘনত্বের তারতম্য হয়, তেমনি শব্দ উৎপাদনে যদি বিদ্যুৎ প্রবাহের তীব্রতার তারতম্য ঘটাতে পারি তাহলে টেলিগ্রাফে বার্তা পাঠানোর বদলে আমি শব্দধ্বনি পাঠাতে পারি। অনেক চেষ্টা করে তিনি একটা যন্ত্র তৈরি করলেন, যা আজ টেলিফোন নামে খ্যাত হয়েছে।কিন্তু টেলিফোন আবিস্কারক কে এই নিয়ে তুমুল হৈ চৈ বাঁধে। কারণ একই আবিস্কারের জন্য কাজ করছেন তিনজন তাতেই এত গোলমাল, যখন আবিস্কর্তা নিয়ে এত হৈ চৈ তখন বেল ও তাঁর এক সহকর্মী ওয়াটসন দুইজনে মিলে টেলিফোন যন্ত্র আবিস্কার নিয়ে ব্যস্ত। ১৮৭৬ সালে ১০ মার্চ বিকালে রিসিভার লাগানো তারের এক প্রান্ত কানে লাগিয়ে ওয়াটসন ঘরে বসে কাজ করছিলেন। হাঠাৎ শুনতে পেলেন গ্রাহামবেলের কণ্ঠস্বর, তিনি আনন্দে ছুটে গেলেন গ্রাহামবেলের কাছে। তাকে জড়িয়ে ধরলেন, একদিন ব্রাজিলের সম্রাট ডন পেদ্রো কানে রিসিভার লাগিয়ে বসে আছেন। অন্য প্রন্ত থেকে গ্রাহমবেল হ্যামলেট থেকে দুটো বিখ্যাত লাইন টেলিফোনে আবৃত্তি করলেন- “To be or not to be”… সম্রাট চেঁচিয়ে বললেন- My God! It speaks! তারপর প্রদর্শনীতে
এই টেলিফোন দেখানো হল। এই টেলিফোন দেখার ও কথা বলার ভিড় উপচে পড়ল, মানুষের চোখে ও মনে বিস্ময়। এই যন্ত্রের কথা বলা ও শোনা যায়।টেলিফোন আবিস্কর্তা কে এই নিয়ে অনেক মামলা চলে। শেষে গ্রাহামবেলই টেলিফোন আবিস্কারক হিসেবে গণ্য হন। জীবনে অনেক সম্মান পান, তবে তিনি ব্যক্তি জীবনে সুখী ছিলেন না। নিঃসঙ্গ জীবনে খুব কষ্ট পেতেন, নিজের আবিস্কৃত টেলিফোনটাকে তিনি একসময় ঘৃণা করতেন। বলতেন, “এই জানোয়ারটাকে আমি কখনও ব্যবহার করি না”। তাঁর মানসিক যন্ত্রণাই তাঁকে খুব কষ্ট দিত।১৯২২ সালের ২ আগস্ট নিজের বাড়িতেই মারা যান তিনি। তাঁর আবিস্কার টেলিফোন আমাদের প্রতি মুহূর্তেই মনে করিয়ে দেয় বৈজ্ঞানিক গ্রাহামবেলকে।
0 comments:
Post a Comment