ক্যানসারের জন্য দায়ী বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে এককথায় কারসিনোজেন বলা হয়। আমাদের চারপাশের অনেক খাদ্যদ্রব্যই এই ক্ষতিকর কারসিনোজেনের আধার হিসেবে কাজ করে।1.উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে লাল মাংসকে ভাজা বা ঝলসানো হলে বা গ্রিল করা হলে মাংসের আমিষ ভেঙে হেটেরো সাইক্লিক অ্যামাইন (এইচসিএ) নামের রাসায়নিক তৈরি হয়। আবার ঝলসানো বা গ্রিল
করার সময় মাংসের চর্বি ও রস গলে গলে যে ধোঁয়া তৈরি হয়, তা থেকে সৃষ্টি হয় পলিসাইক্লিক হাইড্রো কার্বন (পিএএইচ) নামের যৌগ। এই দুটোই কারসিনোজেন বা ক্যানসার উৎপাদনকারী উপাদান।2.৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা বা এর ওপরে মাংস ভাজা হলে বা সরাসরি আগুন বা গ্রিলে ঝলসানো হলে অথবা তপ্ত ধাতব পাত্রে ফুটন্ত তেলে দীর্ঘসময় রান্না করা হলে এইচসিএ ও পিএএইচ তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সে কারণে কাবাব, স্টেক, গ্রিল করা মাংস, বারবিকিউ বা ভাজা মাংস বেশি খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ ঝলসানো ও ভাজা মাংস কম খেতে পরামর্শ দিলেও ঠিক কতখানি খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। তবে খাদ্য প্রস্তুতিতে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে ঝুঁকি কমানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।3.সরাসরি আগুনে বা কয়লার ধোঁয়ায় যে খাবার প্রস্তুত করা হয়, তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। অনেকক্ষণ ধরে রান্না করবেন না। রান্নার বা ভাজার সময় কমানোর জন্য দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়। এক. রান্নার আগে লেবু, দই বা সিরকায় ভিজিয়ে রেখে মাংস আগেই নরম করে নেওয়া এবং দুই. চুলায় দেওয়ার আগে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করে নেওয়া। ঝলসানোর সময় মাংস আগুন থেকে অন্তত ছয় ইঞ্চি দূরে রাখবেন।4.মাংস পাতলা করে কাটুন, দৃশ্যমান চর্বির পুরোটাই ফেলে দিন। গ্রিল বা ঝলসানোর সময় যে রস ও তেল নিচে কয়লায় বা আগুনে পড়ে তা বারবার সরিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।5.খাবারের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন এ, সি ও ই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। তাই তাজা শাকসবজি, সালাদ ও ফলমূল দৈনিক খাদ্য তালিকায় বাড়ান।অধ্যাপক পারভীন শাহিদা আখতারমেডিকেল অনকোলজি, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১০, ২০১৩Saturday, October 12, 2013
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment